Powered By Blogger

বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৫

এতিম ঢাকা নগরের অভিভাবক চাই






photo Dhaka Tribune
এ কে এম জাকারিয়া |
ছয় বছর ধরে ঢাকা বিশ্বের বসবাসের সবচেয়ে অনুপযুক্ত শহরগুলোর একটি। বসবাসের জন্য দুনিয়ার কোন শহর কতটা উপযুক্ত, তার একটি তালিকা বছর বছর প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ)। ২০০৯ সালে সেই তালিকায় ১৪০টি দেশের মধ্যে ঢাকার স্থান ছিল ১৩৯তম। ২০১২ সালে ঢাকা বসবাসের জন্য সবচেয়ে নিকৃষ্ট শহর হিসেবে বিবেচিত হয়। মানে ১৪০টি দেশের মধ্যে ১৪০ নম্বর। এক বছরের মধ্যে ঢাকার বাসযোগ্যতায় কোনো পরিবর্তন না হলেও ২০১৩ সালে ঢাকা আবার এক ধাপ এগিয়ে যায়। যুদ্ধের কারণে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের অবস্থা এত শোচনীয় হয়ে পড়ে যে ঢাকাকে ওপরে জায়গা না দিয়ে আর কোনো উপায় ছিল না। এখনো সেই ১৩৯ নম্বরেই স্থির আছে ঢাকা শহর। দামেস্কে যুদ্ধ যে এখনো থামেনি!
মানব উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ ভালো করছে, আমরা গর্ব করি। আবার অনেক সূচকেই বাংলাদেশের অবস্থান নিচের দিকে। দুর্নীতির সূচকে একসময় এক নম্বরে ছিল বাংলাদেশ। এখন নিচের দিক থেকে ১৪ নম্বরে। এটা বাংলাদেশে দুর্নীতি কমেছে বলে নয়, অন্য দেশগুলোতে দুর্নীতি বেড়েছে বলে বাংলাদেশ এগিয়েছে। গণতন্ত্র, মানবাধিকার বা আইনের শাসনের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান নিচের দিকে।

মঙ্গলবার, ২১ জুলাই, ২০১৫

চারণ সাংবাদিক মোনাজাত উদ্দিন




১৯৭৬ সালের মে মাস। পদ্মা নদী উপর ভারতে কর্তৃক অন্যায় ভাবে নির্মিত মর ফাঁদ ফারাক্কা বাধের প্রতিবাদে মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে রাজশাহী থেকে ফারাক্কা মিছিল বের হবে। মিছিলের তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করার জন্য ঢাকা থেকে সাংবাদিকরা রাজশাহীতে পৌঁছেছেন। মোনাজাত উদ্দিনের তখনো পর্যন্ত কোনো পত্রিকায় স্থায়ী চাকরি হয়নি।
তাঁর নিজের কোনো অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড নেই। তারপরও প্রবল উৎসাহ ও চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে তিনি মিছিলের দুদিন রাজশাহীতে এসে পৌঁছেন। ভাসানীর মিছিল কাভার করার জন্য সংবাদ অফিস থেকে সাংবাদিক ও ফটোগ্রাফার পাঠানো হয়েছে। তাঁদের কাছে মোনাজাত উদ্দিন পাত্তাই পেলেন না। বরং মোনাজাত উদ্দিনকে পেয়ে তারা পান-বিড়ি-সিগারেটআনার মতো ফুট-ফরমায়েসের কাজ কিছুটা করিয়ে নিলেন। মোনাজাত উদ্দিনও ভয়ে ভয়ে, বিনয়ের সাথেসেই কাজ করে দেন। প্রতিবাদ করতে পারেননি। ঢাকার সাংবাদিকরা যদি মাইন্ড করে’!

সোমবার, ১৩ জুলাই, ২০১৫

পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে : প্রধানমন্ত্রী



 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের চত্বরে একটি হৈমন্তীর চারা রোপণ  করেন

আমাদের পরিবেশ ডেস্ক: জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযানের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন গতকাল রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বিশ্ব পরিবেশ দিবস জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আহ্বান জানান তিনি প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদেরজগৎ মাতারসুরক্ষায় আমরা সবাই যত্নবান হলে সবুজ প্রবৃদ্ধি বিকাশের মাধ্যমে দেশের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারি

শনিবার, ১১ জুলাই, ২০১৫

ফিচার লেখার কৌশল




সংবাদপত্রের সংবাদ, অভিমত ও বিজ্ঞাপন বাদ দিয়ে যা থাকে প্রচলিত অর্থে সেগুলিই ফিচার। এদের বেশির ভাগ প্রতিবেদনকে বলা যেতে পারে ফিচারধর্মী প্রতিবেদন। কোন কোন ফিচার বিশেষজ্ঞ আবার একে সংবাদ মাধ্যমের soft news বা কোমল সংবাদ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। আমরা কোমল সংবাদের সঙ্গে পরিচিত হলেই মোটামুটি বুঝতে পারব ফিচার আসলে কি ধরনের প্রতিবেদন।
ফিচারের লক্ষ্য
* সাদামাটা সংবাদে থাকে নীরস তথ্য। সেইসব তথ্য থেকে পাঠকের ক্লান্ত চিত্তে কিছুটা কোমল পরশ বুলিয়ে  দেয়াই ফিচারের লক্ষ্য।
সংক্ষেপে ফিচারের প্রধান প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে
* অবহিত করা * শিক্ষাদান করা
* আনন্দদান করা
* উদ্ধুদ্ধ করা
ফিচারের প্রকৃতি বৈশিষ্ট্য
* ফিচার এক ধরনের সরস বিবরণ
* সাদামাটা ও গুরুগম্ভীর খবর থেকে এর আবেদন ভিন্নতর।
* ফিচারের আবেদন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফুরিয়ে যায় না।
* হার্ড নিউজের মতো ফিচারের বৈশিষ্ট্ তাৎক্ষণিক টাটকা না হলেও এর আবেদন শেষ হয়ে যায় না।
* সাদামাটা সংবাদে থাকে আঁটসাট তথ্যের ছড়াছড়ি, সময়ের তাগিদ থাকে এত কড়াকড়ি; কিন্তু ফিচারের সে ধরনের কোন বাধ্যবাধকতা থাকে না।
*  কিছু না ঘটলেও ফিচার লেখা যায়। কোন ঘটনা ঘটার জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। ফিচার গদ্যময় রচনা হলেও এতে ফুটিয়ে তোলা যায় বিভিন্ন মাত্রার আবেগ, অনুভূতি, ভালবাসা ও কৌতুহল।
* উপস্থাপনের দিক থেকে এতে নাটকীয়তারও সুযোগ রয়েছে প্রচুর।
* এটি এমন একটি রচনা, এমন একটি বিবরণ যা তুচ্ছ বা নগন্য কোন ঘটনাকেও সুখপাঠ্য করে তোলে।
* একে কখনও কখনও কিছুটা রম্য ও ব্যঞ্জনাময় মনে হলেও বাস্তবের সঙ্গে থাকে এর প্রত্যক্ষ সংযোগ।
* ফিচারে একটি বিষয়ই প্রাধান্য পায়।
* নিছক খবর ছাড়াও মানবিক আবেদনসহ আরও কিছু তথ্য পাঠক চায়।

ফিচারের সংজ্ঞা
*‘ফিচারপ্রত্যয়টি সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকদের মধ্যে সর্বাধিক ব্যবহৃত শব্দ।হ্যারসিন এবং জনসন এর ÔThe Complete ReporterÕ গ্রন্থে লিখেছেন ÒThe word ÔfeatureÕ may be one of the most overworked words in the lexicon of journalists.Ó
* ফিচার সম্পর্কে নিউ সার্ভে অব জার্নালিজমগ্রন্থে জর্জ ফক্স মর্ট ও সহলেখকগণ বলেন: ফিচার প্রতিবেদন নিছক সংবাদের চেয়ে মানবিক আবেদনস্পর্শ দিককে বেশি প্রাধান্য দেয়, যে কারণে সাধারণ পাঠক ফিচারের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং তারা এর প্রতি মনোযোগী হয়; আর এতে করে ফিচার পাঠকের আবেগকে নাড়া দিতে সক্ষম হয়

ফিচারের বিশেষ দৃষ্টিকোন
* সফল ফিচারের দিক নির্দেশনা দেয় একটি বিশেষ প্রত্যয়; যার নাম বা ংষধহঃবিশেষ দৃষ্টিকোন
* বিশেষ দৃষ্টিকোণ ফিচারের গুরুত্বপূর্ণ ও অনিবার্য বৈশিষ্ট্য
* Feature is a slanted article
* বিশেষ দৃষ্টিকোন ছাড়া ফিচার লেখক গন্তব্যহীন পথের যাত্রী।

মানবিক আবেদন
* ‘মানবিক আবেদনফিচারের প্রাণ। মানবিক আবেদন না থাকলে ফিচার লেখার কোন অর্থ নেই। মানবিক আবেদনের উপাদানের উপাদান হল এক বা একাধিক মাত্রার আবেগ যেমন: ভালবাসা, ঘৃনা, ক্রোধ, বিস্ময়, বেদনা, ক্ষোভ, ভীতি ইত্যাদি।

ফিচার পরিকল্পনার মূলমন্ত্র: আগ্রহের ত্রিবলয়
তথ্য সংগ্রহ ও প্রতিবেদন রচনায় যেমন ষড়-ক’ (বা 5Ws+H) এর কথা মনে রাখতে হয়; ফিচার লেখার ক্ষেত্রেও লেখককে অনুরূপভাবে আগ্রহের ত্রিবলয় Three Rings of Interest  এর কথা মনে রেখে ফিচার   লেখার পরিকল্পনা করতে হয়। আগ্রহের এই ত্রিবলয় হল:
* পত্রিকার সম্পাদকীয় নীতি
* পাঠকের সম্ভাব্য আগ্রহ
* পাঠকের প্রকৃত আগ্রহ

ফিচারের প্রকরণ
* সংবাদ ফিচার
* মানবিক আবেদনমূলক প্রতিবেদন
* ব্যক্তিত্ব চিত্রনমূলক ফিচার
* আত্মকথনমূলক ফিচার
* ঐতিহাসিক ফিচার
* সাক্ষাৎমূলক ফিচার
ক্স ব্যাখ্যামূলক ফিচার

ঝরঝরে গদ্যের আকর্ষনীয় একটি ফিচার লিখতে হলে কি করতে হবে
*  প্রকাশ করার জন্য লিখুন। চমক বা নাটকীয়তা তৈরির অতিরঞ্জিত অতিকথন করবেন না।
* পরিচিত শব্দাবলি ব্যবহার করুন। নিজের পান্ডিত্য জাহিরের জন্য দুর্বোধ বা অপ্রচলিত (প্রয়োজন দেখা দিলে ভিন্ন কথা) শব্দ ব্যবহার করবেন না। ভারি ভারি শব্দের ভারে লেখাটি যাতে দেবে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
* ছোট ছোট প্যারাগ্রাফে লেখাটিকে বিন্যাস করুন। এতে পাঠকের চোখ স্বস্তি পাবে। পড়তে সুবিধা হবে।
* বহুদিন ধরে বারবার ব্যবহৃত শব্দ বা শব্দাবলি ব্যবহার করবেন না।
* বিশেষণ ব্যবহারে সতর্ক থাকুন। অযথা বেশি বেশি বিশেষণ ব্যবহার করবেন না।
* যেভাবে সহজে সবার সঙ্গে লোকে কথা বলে সেভাবে লিখুন।
ক্স ছোট ছোট বাক্য ব্যবহার করুন। গদ্যের চলনে যে একটি ছন্দ রয়েছে তা বজায় রাখুন। বাক্য যত ছোট হবে মনের ভাব তত বেশি পরিস্কারভাবে প্রকাশ করা যাবে। বাক্যের শব্দ সংখ্যার পরিমাণে বোঝা যাবে বাক্যটি আমরা কতটুকু বুঝতে পারছি। শব্দ সংখ্যার হিসাবে বাক্য কি অর্থ নেয় তা নিচে দেওয়া হল:
খুব সহজ= ৮ শব্দ বা তার কম
সহজ= ১১ শব্দ
 মোটামুটি সহজ = ১৪ শব্দ
প্রমিত বা স্ট্যান্ডার্ড= ১৭ শব্দ
কঠিন= ২১ শব্দ
 বেশ কঠিন= ২৫ শব্দ
খুবই কঠিন= ২৯ শব্দ বা তার বেশি।

অন লাইনে ফিচার লেখার টিপস




জাহাঙ্হীর আলম শোভন

সংবাদ দু ধরনের হয়ে থাকে। যেমন: ১. Hard News অর্থাৎ গুরু সংবাদ একেবারে তথ্য জানানো। এটা অনেকক্ষেত্রে আমাদের আবেগ অনুভূতিতে খুব একটা আলোড়ন জাগাতে নাও পারে।নিরপেক্ষভাবে তথ্য জাননো এ ধরনের সংবাদের কাজ। ২. Soft News অর্থাৎ লঘু সংবাদ। এটা পড়তে ভালো লাগে। 



আবেগ-অনুভূতিতে সাড়া জাগায়। এটি মূলত স্বস্তিদায়ক খবর।এতে কিছু বাড়তি উপাদান থাকে। লেখতিতেও ভিন্নতা থাকে। Hard News পড়ার ক্ষেত্রে সবসময় স্বস্তিদায়ক বিষয় থাকবে এমন কথা নেই। কিন্তু Soft News পড়ার ক্ষেত্রে সুখপাঠ্যতার স্পর্শ থাকে। ফিচার আসলে একধরনের Soft News আওতাভুক্ত। নিউজের একঘুয়েমি থেকে মুক্তি দেয়ার একধরনের সংবাদভিত্তিক প্রচেষ্টা।
ফিচারের কোনো ছকবাঁধা কোন সংজ্ঞা নেই। কেউ কেউ বলেছেন, ফিচার পাঠকের কাছে নিরস বিষয়কে সরস করে উপস্থাপন করে থাকে। যেন অনেকটা এ রকম যে, ফিচার হলো a lemon turned into lemonadeফিচার হলো এমন একধরনের রমনীয় লেখা যা পাঠকের মনকে আকর্ষিত করে, পড়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করে শেষে মুগ্ধতার সাথে পরিতৃপ্ত করে। এবং পাঠক তাতে নতুনত্ব খুজে পায়।
খবর আর ফিচার দুটোই কিন্তু তথ্য প্রদানকারী লেখা। তবে এ দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য হলো: খবর কোনো ঘটনা সংঘটিত না হলে লেখা হয় না, কিন্তু ফিচার সংঘটিত ঘটনা অথবা কোনো ঘটনা নয় তার উপরও লেখা যেতে পারে।এমনকি 20 বছরের পুরনো ঘটনার উপরও হতে পারে। যেমন: দেশের অর্থব্যবস্থায় মুদ্রাস্ফীতি ১৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি খবর। আর এই খবরের ভিত্তিতে সাধারণ মানুষের জীবনপ্রবাহ কতটা দুর্দশায় নেমে গেছে তা ফিচারের বিষয়বস্তু হতে পারে। ১৯১২ সালে টাইটানিক ডুবির ঘটনা নিয়ে আগামীকাল ফিচার হতে পারে। অথবা তেমন কোনো খবর নয় সে বিষয়কে নিয়েও ফিচার লেখা যেতে পারে। যেমন: পদ্মা নদী বা যাদুঘরের উপর লেখা ফিচার। কিন্তু ফিচারের দুনিয়া সারাবিশ্বের সমস্তকিছু। বলা হয়ে থাকে: The whole world is the workshop of a feature writerখবর মানুষকে জানায় আর ফিচার মানুষের মনে কিছুটা বিনোদন দেয়। খবরে লেখক কোনো মন্তব্য করতে পারেন না, কিন্তু ফিচারে লেখক তার পরমর্শ বা দিকনির্দেশনার ইঙ্গিত দিতে পারেন।