Powered By Blogger

বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৫

আবারও গাইতে হবে তোমাকে




হারুন ইবনে শাহাদাত
 বাংলাদেশ গানের দেশ। এদেশের মানুষ ও প্রকৃতি সবার মাঝে লুকিয়ে আছে সুরের লহরী। জমি চাষের সময় ধান -পাট কাটা. ক্ষেত নিড়ানির সময় কৃষকের কণ্ঠের গানে উদাস হয়ে বয়ে যায় বাতাস। নৌকা বাইবার সময় মাঝির ভাটিয়ালী সুর নদীর পানির ছলাৎ ছলাৎ সুরের সাথে মিশে যে ছন্দ দোলা তোলে তার তুলনা আর কোথাও মিলে না। এই জন্যই হয় তো বলা হয়, প্রাণের দেশ, ধানের দেশ গানের দেশ বাংলাদেশ। এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না, যিনি মনের অজান্তে কোনদিন গান গেয়ে উঠেননি। তারপরও ধর্ম বিশ্বাসের কারণে দেশের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষ মনে করেন, গান-বাজনা হারাম। 
বাংলা ভাষায় প্রথম গজল ও ইসলামের গানের স্রষ্টা জাতীয কবি কাজী নজরুল ইসলাম
কোরআন-হাদীসের কোথাও এমন কথা লেখা না থাকলেও এমন স্ববিরোধী বিশ্বাস নিয়ে আমৃত্যু বসবাস করেন ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী অধিকাংশ মানুষ। এমন দ্বন্দ্বের কারণে তাদের মনের মাঝে পাপবোধের বসবাস মানসিক সুসষম বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে। এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মনের এই দ্বন্দ্বের অবসান ঘটানোর ক্ষুদ্র প্রয়াস এই নিবন্ধ।
ভাল বা ইতিবাচক উদ্দেশ্যে তৈরি জিনিসও কতটা ভয়াবহ হতে পারে তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ এ্যাটমিক শক্তি। অনুরূপভাবে একটি ছুড়ি একজন ডাক্তার ব্যবহার করেন জীবন রক্ষার জন্য, অপরদিকে একজন খুনী ও ডাকাত ব্যবহার করে জীবন হরণ করার কাজে। সঙ্গীত বা গান-বাজনার ইতি কিংবা নেতিবাচক দিকও নির্ভর করে গীতিকার ও গায়কের ওপর। গান যেমন মানসিক বিকাশে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে, আবার উল্টো দিকে যৌন উন্মাদনা ও কুভাব সৃষ্টি করে সমাজে বিশৃঙ্খলাও ডেকে আনতে পারে। একজন ডাকাত ছুড়ি দিয়ে মানুষ খুন করছে এই যুক্তি দিয়ে যেমন ডাক্তারের হাত থেকে ছুড়ি কেড়ে নেয়া ঠিক নয়, অনুরূপভাবে চিত্ত বিনোদন ও মানসিক বিকাশের সহায়ক নির্মল সঙ্গীতও নিষিদ্ধ হতে পারে না। ইসলামী আইনশাস্ত্র বা ফিকাহর মূলীতি হলো, ‘যা অবৈধ ঘোষণা করা হয়নি, তাই বৈধ।সঙ্গীত অবৈধ পবিত্র কোরআনে এমন কোন আয়াত নেই। তারপরও কেউ কেউ কয়েকটি আয়াতের ব্যাখ্যায় সাহাবী ইবনে আব্বাস রা. এবং সাহাবী ইবনে মাসউদ রা. এর উদ্ধৃতি দিয়ে গানকে অবৈধ বলা হয়। কিন্তু  মদ,সুদ এবং জুয়া নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে আল কোরআনে যেভাবে সুষ্পষ্টভাবে ঘোষণা করা হয়েছে, গিনা,নাগমা,সামা, গান বা সঙ্গীতকে সেভাবে নিষিদ্ধ করা হয়নি।
যারা সঙ্গীতকে হারাম মনে করেন, তারা তাদের যুক্তির পক্ষে সূরা আল: লুকমানের ৬ নম্বর আয়াতের লাহ্ওয়াল হাদীসযার অর্থ অনর্থক বা অপ্রয়োজনীয় গল্প-গুজব বা বাক্য। সুরা নাজমের ৬১ নম্বর আয়াতের সামেদুনবা উদাসীন। সুরা হুজরাতের ৪৯নং আয়াতে সাউতবা গর্দভের স্বর । উল্লেখিত এমন নানান প্রতিশব্দ ব্যবহার করে যারা সঙ্গীত বা গানকে নিষিদ্ধ বলে প্রচার করে, তাদের অবগতির জন্য বলা প্রয়োজন- সঙ্গীতের আরবি প্রতি শব্দ গিনা,নাগমা,সামা ব্যবহৃত হয়নি।

মঙ্গলবার, ২৫ আগস্ট, ২০১৫

লবণাক্ততা : বছরে ক্ষতি ২২ কোটি টাকা




মো. আবদুস সালিম

মাটিতে দিন দিন লবণাক্ততা বেড়েই চলেছে। লবণাক্ততার বেশি শিকার উপকূলীয় অঞ্চল। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ত এলাকা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তা ছড়িয়ে পড়েছে পশ্চিমাঞ্চলের এলাকাগুলোতেও। কৃষি ব্যবস্থাপনা ও শস্য বিন্যাসে পড়ছে লবণের বিরূপ প্রভাব। মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইন্সটিটিউট পরিচালিত জরিপে বলা হয়েছে, আমাদের দেশের মোট আবাদযোগ্য ভূমির প্রায় ৩০ ভাগ জমি পড়েছে উপকূল এলাকায়। আরও বলা হয়েছে, উপকূলীয় ২ দশমিক ৮৬ মিলিয়ন হেক্টর জমির মধ্যে প্রায় ০.৮৪ মিলিয়ন হেক্টর জমিই নানাভাবে লবণাক্ততায় প্রভাবিত। গত কয়েক দশকে দক্ষিণাঞ্চলে লবণের মাত্রা প্রায় ২৭ ভাগ বেড়েছে। আর গত এক দশকে এর মাত্রা বেড়েছে প্রায় ৪ ভাগ। বর্তমানে দেশে লবণাক্ত মাটি আছে ৯৩টি উপজেলা এবং ১৮টি জেলায়। তার মধ্যে অন্যতম স্থান সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরগুনা, পিরোজপুর, নড়াইল ও খুলনা। বিজ্ঞানীরা আশংকা করছেন, উপকূল থেকে লবণ যেভাবে পশ্চিমাঞ্চলের দিকে ছড়িয়ে পড়ছে তাতে আগামী কয়েক দশকে বিপন্ন হয়ে উঠতে পারে তিন কোটি মানুষের জীবন, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ছয় ভাগের এক ভাগ। এতে করে দেখা দেবে চরম মানবিক ও জৈবিক বিপর্যয়।

রবিবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৫

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) আয়োজিত গোলটেবিল




ঢাকা: কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরুর মাংস খেলে মানুষও মোটাতাজা হতে থাকে। কারণ, স্টেরয়েড-জাতীয় রাসায়নিক মানুষের শরীরে বেশি মাত্রায় জমা হলে মানুষের বিপাক ক্রিয়াতে এর প্রভাব পড়ে।

গত ২২ জুলাই শনিবার পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) আয়োজিত পবা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল আলোচনায় আলোচকেরা এ কথা বলেন। পবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

বুধবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৫

বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকায় ঢাকা ফের দ্বিতীয়




বসবাসের জন্য সবচেয়ে খারাপ শহরের তালিকায় আবারও দ্বিতীয় হলো ঢাকা। যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান-ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) এই তালিকা প্রকাশ করেছে। সিরিয়ার দামাস্কাসের পরের অবস্থানেই রয়েছে ঢাকা। গত বছরও ঢাকা দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল। এবারও ঢাকার পাওয়া নম্বরেরও কোনো পরিবর্তন হয়নি। আর দামাস্কাস গত বছরের চেয়ে কম নম্বর পেয়েছে।
বিশ্বের ১৪০টি শহরের ওপর জরিপ করে প্রতিবছর 'বৈশ্বিক বসবাস উপযোগিতা সূচক' প্রকাশ করে ইআইইউ। অপরাধের মাত্রা, সংঘাতের ঝুঁকি, স্বাস্থ্যসেবার মান, বাধা-নিষেধের মাত্রা, তাপমাত্রা এবং শিক্ষা ও যোগাযোগব্যবস্থা বিবেচনায় নিয়ে বসবাসের উপযোগী শহরের ওই তালিকা করা হয়। এতে বসবাসের জন্য সবচেয়ে ভালো শহর বিবেচিত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন। মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে মেলবোর্নের নম্বর ৯৭.৫। আর ঢাকার নম্বর ৩৮.৭। দামাস্কাসের নম্বর ২৯.৩।
ইআইইউর সূচক তৈরিতে মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে ২৫ নম্বর বরাদ্দ রাখা হয় স্থিতিশীলতার জন্য। ২০ নম্বর স্বাস্থ্যসেবার জন্য। এ ছাড়া সংস্কৃতি ও পরিবেশের জন্য ২৫ নম্বর, শিক্ষার জন্য ১০ এবং অবকাঠামোর জন্য ২০ নম্বর ধরে তালিকা করা হয়। মোটা দাগের এসব ক্যাটাগরির ভেতরে অবশ্য আরো অনেক সাব-ক্যাটাগরি থাকে। যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশ সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসের মতো স্থিতিশীলতার বড় সংকট না থাকলেও শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অবকাঠামোর দিক দিয়ে ঢাকা অনেক পিছিয়ে আছে। এগুলোর কোনো উন্নতি হচ্ছে না বলেই বাজে শহরের তালিকায় ঢাকা প্রতিবছর খারাপ অবস্থানে থাকছে। এই নিয়ে তিন বছর ঢাকা বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থান পেল।

মঙ্গলবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৫

আবার পানি বাড়ছে



দেশের বেশির ভাগ স্থানে নদ-নদীর পানি বাড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে ১৮ আগস্ট  মঙ্গলবার দেশের নদ-নদীর ৬৬টি স্থানে পানি বেড়েছে এবং ১৩টি স্থানে পানি হ্রাস পেয়েছে। দুটি স্থানে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউবোর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, সব প্রধান নদনদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে । আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।

পাউবোর ৮৫টি পানি মনিটরিং স্টেশনের মধ্যে ৬৬টি স্থানে পানি বৃদ্ধি ও ১৩টি স্থানে পানি হ্রাস পেয়েছে। তিনটি স্থানে পানি অপরিবর্তিত রয়েছে। তিনটি স্থানের তথ্য পাওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৫

এতিম ঢাকা নগরের অভিভাবক চাই






photo Dhaka Tribune
এ কে এম জাকারিয়া |
ছয় বছর ধরে ঢাকা বিশ্বের বসবাসের সবচেয়ে অনুপযুক্ত শহরগুলোর একটি। বসবাসের জন্য দুনিয়ার কোন শহর কতটা উপযুক্ত, তার একটি তালিকা বছর বছর প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ)। ২০০৯ সালে সেই তালিকায় ১৪০টি দেশের মধ্যে ঢাকার স্থান ছিল ১৩৯তম। ২০১২ সালে ঢাকা বসবাসের জন্য সবচেয়ে নিকৃষ্ট শহর হিসেবে বিবেচিত হয়। মানে ১৪০টি দেশের মধ্যে ১৪০ নম্বর। এক বছরের মধ্যে ঢাকার বাসযোগ্যতায় কোনো পরিবর্তন না হলেও ২০১৩ সালে ঢাকা আবার এক ধাপ এগিয়ে যায়। যুদ্ধের কারণে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের অবস্থা এত শোচনীয় হয়ে পড়ে যে ঢাকাকে ওপরে জায়গা না দিয়ে আর কোনো উপায় ছিল না। এখনো সেই ১৩৯ নম্বরেই স্থির আছে ঢাকা শহর। দামেস্কে যুদ্ধ যে এখনো থামেনি!
মানব উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ ভালো করছে, আমরা গর্ব করি। আবার অনেক সূচকেই বাংলাদেশের অবস্থান নিচের দিকে। দুর্নীতির সূচকে একসময় এক নম্বরে ছিল বাংলাদেশ। এখন নিচের দিক থেকে ১৪ নম্বরে। এটা বাংলাদেশে দুর্নীতি কমেছে বলে নয়, অন্য দেশগুলোতে দুর্নীতি বেড়েছে বলে বাংলাদেশ এগিয়েছে। গণতন্ত্র, মানবাধিকার বা আইনের শাসনের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান নিচের দিকে।

মঙ্গলবার, ২১ জুলাই, ২০১৫

চারণ সাংবাদিক মোনাজাত উদ্দিন




১৯৭৬ সালের মে মাস। পদ্মা নদী উপর ভারতে কর্তৃক অন্যায় ভাবে নির্মিত মর ফাঁদ ফারাক্কা বাধের প্রতিবাদে মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে রাজশাহী থেকে ফারাক্কা মিছিল বের হবে। মিছিলের তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করার জন্য ঢাকা থেকে সাংবাদিকরা রাজশাহীতে পৌঁছেছেন। মোনাজাত উদ্দিনের তখনো পর্যন্ত কোনো পত্রিকায় স্থায়ী চাকরি হয়নি।
তাঁর নিজের কোনো অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড নেই। তারপরও প্রবল উৎসাহ ও চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে তিনি মিছিলের দুদিন রাজশাহীতে এসে পৌঁছেন। ভাসানীর মিছিল কাভার করার জন্য সংবাদ অফিস থেকে সাংবাদিক ও ফটোগ্রাফার পাঠানো হয়েছে। তাঁদের কাছে মোনাজাত উদ্দিন পাত্তাই পেলেন না। বরং মোনাজাত উদ্দিনকে পেয়ে তারা পান-বিড়ি-সিগারেটআনার মতো ফুট-ফরমায়েসের কাজ কিছুটা করিয়ে নিলেন। মোনাজাত উদ্দিনও ভয়ে ভয়ে, বিনয়ের সাথেসেই কাজ করে দেন। প্রতিবাদ করতে পারেননি। ঢাকার সাংবাদিকরা যদি মাইন্ড করে’!

সোমবার, ১৩ জুলাই, ২০১৫

পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে : প্রধানমন্ত্রী



 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের চত্বরে একটি হৈমন্তীর চারা রোপণ  করেন

আমাদের পরিবেশ ডেস্ক: জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযানের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন গতকাল রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বিশ্ব পরিবেশ দিবস জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আহ্বান জানান তিনি প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদেরজগৎ মাতারসুরক্ষায় আমরা সবাই যত্নবান হলে সবুজ প্রবৃদ্ধি বিকাশের মাধ্যমে দেশের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারি

শনিবার, ১১ জুলাই, ২০১৫

ফিচার লেখার কৌশল




সংবাদপত্রের সংবাদ, অভিমত ও বিজ্ঞাপন বাদ দিয়ে যা থাকে প্রচলিত অর্থে সেগুলিই ফিচার। এদের বেশির ভাগ প্রতিবেদনকে বলা যেতে পারে ফিচারধর্মী প্রতিবেদন। কোন কোন ফিচার বিশেষজ্ঞ আবার একে সংবাদ মাধ্যমের soft news বা কোমল সংবাদ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। আমরা কোমল সংবাদের সঙ্গে পরিচিত হলেই মোটামুটি বুঝতে পারব ফিচার আসলে কি ধরনের প্রতিবেদন।
ফিচারের লক্ষ্য
* সাদামাটা সংবাদে থাকে নীরস তথ্য। সেইসব তথ্য থেকে পাঠকের ক্লান্ত চিত্তে কিছুটা কোমল পরশ বুলিয়ে  দেয়াই ফিচারের লক্ষ্য।
সংক্ষেপে ফিচারের প্রধান প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে
* অবহিত করা * শিক্ষাদান করা
* আনন্দদান করা
* উদ্ধুদ্ধ করা
ফিচারের প্রকৃতি বৈশিষ্ট্য
* ফিচার এক ধরনের সরস বিবরণ
* সাদামাটা ও গুরুগম্ভীর খবর থেকে এর আবেদন ভিন্নতর।
* ফিচারের আবেদন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফুরিয়ে যায় না।
* হার্ড নিউজের মতো ফিচারের বৈশিষ্ট্ তাৎক্ষণিক টাটকা না হলেও এর আবেদন শেষ হয়ে যায় না।
* সাদামাটা সংবাদে থাকে আঁটসাট তথ্যের ছড়াছড়ি, সময়ের তাগিদ থাকে এত কড়াকড়ি; কিন্তু ফিচারের সে ধরনের কোন বাধ্যবাধকতা থাকে না।
*  কিছু না ঘটলেও ফিচার লেখা যায়। কোন ঘটনা ঘটার জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। ফিচার গদ্যময় রচনা হলেও এতে ফুটিয়ে তোলা যায় বিভিন্ন মাত্রার আবেগ, অনুভূতি, ভালবাসা ও কৌতুহল।
* উপস্থাপনের দিক থেকে এতে নাটকীয়তারও সুযোগ রয়েছে প্রচুর।
* এটি এমন একটি রচনা, এমন একটি বিবরণ যা তুচ্ছ বা নগন্য কোন ঘটনাকেও সুখপাঠ্য করে তোলে।
* একে কখনও কখনও কিছুটা রম্য ও ব্যঞ্জনাময় মনে হলেও বাস্তবের সঙ্গে থাকে এর প্রত্যক্ষ সংযোগ।
* ফিচারে একটি বিষয়ই প্রাধান্য পায়।
* নিছক খবর ছাড়াও মানবিক আবেদনসহ আরও কিছু তথ্য পাঠক চায়।

ফিচারের সংজ্ঞা
*‘ফিচারপ্রত্যয়টি সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকদের মধ্যে সর্বাধিক ব্যবহৃত শব্দ।হ্যারসিন এবং জনসন এর ÔThe Complete ReporterÕ গ্রন্থে লিখেছেন ÒThe word ÔfeatureÕ may be one of the most overworked words in the lexicon of journalists.Ó
* ফিচার সম্পর্কে নিউ সার্ভে অব জার্নালিজমগ্রন্থে জর্জ ফক্স মর্ট ও সহলেখকগণ বলেন: ফিচার প্রতিবেদন নিছক সংবাদের চেয়ে মানবিক আবেদনস্পর্শ দিককে বেশি প্রাধান্য দেয়, যে কারণে সাধারণ পাঠক ফিচারের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং তারা এর প্রতি মনোযোগী হয়; আর এতে করে ফিচার পাঠকের আবেগকে নাড়া দিতে সক্ষম হয়

ফিচারের বিশেষ দৃষ্টিকোন
* সফল ফিচারের দিক নির্দেশনা দেয় একটি বিশেষ প্রত্যয়; যার নাম বা ংষধহঃবিশেষ দৃষ্টিকোন
* বিশেষ দৃষ্টিকোণ ফিচারের গুরুত্বপূর্ণ ও অনিবার্য বৈশিষ্ট্য
* Feature is a slanted article
* বিশেষ দৃষ্টিকোন ছাড়া ফিচার লেখক গন্তব্যহীন পথের যাত্রী।

মানবিক আবেদন
* ‘মানবিক আবেদনফিচারের প্রাণ। মানবিক আবেদন না থাকলে ফিচার লেখার কোন অর্থ নেই। মানবিক আবেদনের উপাদানের উপাদান হল এক বা একাধিক মাত্রার আবেগ যেমন: ভালবাসা, ঘৃনা, ক্রোধ, বিস্ময়, বেদনা, ক্ষোভ, ভীতি ইত্যাদি।

ফিচার পরিকল্পনার মূলমন্ত্র: আগ্রহের ত্রিবলয়
তথ্য সংগ্রহ ও প্রতিবেদন রচনায় যেমন ষড়-ক’ (বা 5Ws+H) এর কথা মনে রাখতে হয়; ফিচার লেখার ক্ষেত্রেও লেখককে অনুরূপভাবে আগ্রহের ত্রিবলয় Three Rings of Interest  এর কথা মনে রেখে ফিচার   লেখার পরিকল্পনা করতে হয়। আগ্রহের এই ত্রিবলয় হল:
* পত্রিকার সম্পাদকীয় নীতি
* পাঠকের সম্ভাব্য আগ্রহ
* পাঠকের প্রকৃত আগ্রহ

ফিচারের প্রকরণ
* সংবাদ ফিচার
* মানবিক আবেদনমূলক প্রতিবেদন
* ব্যক্তিত্ব চিত্রনমূলক ফিচার
* আত্মকথনমূলক ফিচার
* ঐতিহাসিক ফিচার
* সাক্ষাৎমূলক ফিচার
ক্স ব্যাখ্যামূলক ফিচার

ঝরঝরে গদ্যের আকর্ষনীয় একটি ফিচার লিখতে হলে কি করতে হবে
*  প্রকাশ করার জন্য লিখুন। চমক বা নাটকীয়তা তৈরির অতিরঞ্জিত অতিকথন করবেন না।
* পরিচিত শব্দাবলি ব্যবহার করুন। নিজের পান্ডিত্য জাহিরের জন্য দুর্বোধ বা অপ্রচলিত (প্রয়োজন দেখা দিলে ভিন্ন কথা) শব্দ ব্যবহার করবেন না। ভারি ভারি শব্দের ভারে লেখাটি যাতে দেবে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
* ছোট ছোট প্যারাগ্রাফে লেখাটিকে বিন্যাস করুন। এতে পাঠকের চোখ স্বস্তি পাবে। পড়তে সুবিধা হবে।
* বহুদিন ধরে বারবার ব্যবহৃত শব্দ বা শব্দাবলি ব্যবহার করবেন না।
* বিশেষণ ব্যবহারে সতর্ক থাকুন। অযথা বেশি বেশি বিশেষণ ব্যবহার করবেন না।
* যেভাবে সহজে সবার সঙ্গে লোকে কথা বলে সেভাবে লিখুন।
ক্স ছোট ছোট বাক্য ব্যবহার করুন। গদ্যের চলনে যে একটি ছন্দ রয়েছে তা বজায় রাখুন। বাক্য যত ছোট হবে মনের ভাব তত বেশি পরিস্কারভাবে প্রকাশ করা যাবে। বাক্যের শব্দ সংখ্যার পরিমাণে বোঝা যাবে বাক্যটি আমরা কতটুকু বুঝতে পারছি। শব্দ সংখ্যার হিসাবে বাক্য কি অর্থ নেয় তা নিচে দেওয়া হল:
খুব সহজ= ৮ শব্দ বা তার কম
সহজ= ১১ শব্দ
 মোটামুটি সহজ = ১৪ শব্দ
প্রমিত বা স্ট্যান্ডার্ড= ১৭ শব্দ
কঠিন= ২১ শব্দ
 বেশ কঠিন= ২৫ শব্দ
খুবই কঠিন= ২৯ শব্দ বা তার বেশি।