Powered By Blogger

শনিবার, ১৬ মে, ২০১৫

শেখ ফরিদ বা কালো তিতির







কাশ্মীর থেকে শুরু করে হিমালয়ের পাদদেশ ধরে নেপাল, ভুটান হয়ে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত এই পাখির বসবাস। সমতলে একমাত্র বাংলাদেশেই এদের সর্বত্র দেখা যেত। এখন বাংলাদেশের শেষপ্রান্তে হয়েছে এর শেষ ঠাঁই। জুন-জুলাই মাসে আখক্ষেতের জমিনে ডিম পেড়ে কোনোমতে বংশে বাতি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে তারা এ দেশে। কাজীপাড়া আর তেলিপাড়ার মানুষ এ পাখির নাম দিয়েছে শেখ ফরিদ। পাখিটির পোশাকি বাংলা নাম কালা তিতির। ইংরেজি নাম Black Francolin (ব্ল্যাক ফ্র্যাঙ্কোলিন) আর বৈজ্ঞানিক নাম Francolinus francolinus

তিতির পরিবারের (Phasianidac) সদস্য এই কালো তিতির (Francolinus lrancolinus) হারিয়ে গেছে গত পঁচিশ বছর। চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে লম্বা ঘাসের জলাভূমিতে এক সময় এদের চারণ ছিল। দেশী মুরগীর ছয় মাসের বাচ্চার আকারের (৩১ সেঃ মিঃ) গোলগাল এই পাখিটির পুরুষরা বাহারী রঙের মুখের নিচ ও বুক কালো, গলায় লাল রিং, চোখের নিচে সাদা রঙ। শরীরের পালক কালচে তবে পালকের অগ্রভাগ সাদা। পেছনের ডানার পালক লালচে, পা ও লেজের নিচটা লালাভ। মেয়েরা অনেক হালকা, গলার নিচে সাদা, পিঠ লেজ লালে হলুদে মেশানো, দেহটি সাদায় কালোয়।
পা, আঙুল সিঁদুরে লাল হয়ে যায় মিলনকালীনঅর্থাৎ মার্চ থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত। ঘাসের জঙ্গলের নাবালো এলাকায় এরা বাসা তৈরি করে, ছয় থেকে নয়টি হলদে-সবুজ ডিম পাড়ে। মিলনকালে পুরুষ পাখি গলা তুলে, লেজ খাড়া করে চিক-চিক্রিক ডাক ছাড়ে। শেখ ফরিদ ঘাসের বীজ, শস্যকণা, ঘাসের মোথা, খল, পোকা খেয়ে বাঁচে। ভোরবেলা অথবা সায়াহ্নে এরা বেশি তৎপর। বিশ্বব্যাপী যদিও শেখ ফরিদ বিপন্ন পাখি নয়, বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত বিপন্ন। এই সুন্দর পাখিটি রক্ষায় আমাদের এগিয়ে আসা উচিত।
আমাদের পাখি - Bd Bird's photo.

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন